আজ মেঘলা আপার বিয়ে...

(১)

আমাদের রাইটার্স প্যনেলের মানুষগুলো ভীষন ব্যস্ত। সব সময় ব্যস্ত। যদি ও তাদের তেমন কোন কাজ নেই,তবু তারা ব্যস্ত। সবাই এতটাই ব্যস্ত থাকে যে প্যনেলের বয়স দীর্ঘদিন হলে ও,প্যনেলের সব সদস্য কখনো কোনো উৎসবে এক জায়গায় উপস্থিত হতে পারে নি!
এবার ও যে এই নিয়মের ব্যতিক্রম হবে না,এমনটিই ধরে নিয়েছিলাম। ও! আপনাদের বলা হয় নি! এবার একটি বিশেষ উত্সবে প্যনেলের সবার উপস্থিত হওয়ার কথা। কি উৎসব তা নিশ্চয় আপনাদের জানতে ইচ্ছে করছে? আমাদের মেঘলা তাসনিম আপার “শুভ বিবাহ”। আর এ উপলক্ষেই সবার এক হওয়ার কথা। মেঘলা আপার পাঠানো কার্ড হাতে পেয়ে মনে হল এবার সবাই কে উপস্থিত হতেই হবে! মেঘলা আপা কার্ডে নিজের হাতে বড়বড় করে লিখেছে,

“আমি প্যানেলের আণ্ডা বাচ্চা বৃদ্ধ বৃদ্ধা সবগুলা কে একসাথে দেখতে চাই। সুতরাং কার্ড হাতে পাওয়ার পর অন্য সব চিন্তা ভাবনা বাদ দিয়ে নির্দিষ্ট দিনে, কোন রকম গিফট ছাড়া আমার বাড়িতে এসে হাজির হবি। কোন রকম হাংকি পাংকি করেছিস তো মরেছিস!”

বিদ্রঃ স্কুলে পড়াকালীন সময়ে এক ছেলেকে বাসায় গিয়ে পিটিয়ে আসার রেকর্ড আছে আমার! আর কিছু বললাম না।

এই ধরনের ভয়ানক কথা বার্তা সম্বলিত কার্ড হাতে পাওয়ার পর অন্য কোন চিন্তা ভাবনা করবো,এমন সাহস এখনো অর্জন করতে পারি নি! তবে একটা বিষয় ভেবে অবশ্য বারবার দন্ত বিকশিত হচ্ছিল। মেঘলা আপা নির্ঘাত প্যানেলের অন্যদের কে ও এই ধরনের ভয়ানক কথা বার্তা লিখে কার্ড পাঠিয়েছে! সুতরাং সবাই উপস্থিত হচ্ছে ধরে নেওয়াই যাই! কিন্তু যখনই প্যনেলের সবার ব্যস্ততার কথা মনে পড়ছিলো,তখনই দিনটি নিয়ে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ছিলাম। বার বার মনে হচ্ছিলো,কারো সাথেই দেখা হবে না। বরং মনে হচ্ছিলো,বিয়ের পর দিন থেকে প্যনেলের একজন একজন করে সদস্য মেঘলা আপার বাসায় উপস্থিত হয়ে বলবে,“আজ মেঘলার বিয়ে না? বাড়িটা এত ঠান্ডা কেন?”

(২)
অবশেষে কাঙ্ক্ষিত দিনে দীর্ঘ একটা জার্নি শেষে মেঘলা আপার বাড়িতে গিয়ে হাজির হলাম। হাজির হওয়ার সাথে সাথেই একটু বিপাকে পড়ে গেলাম। বিয়ে বাড়ি ভর্তি মানুষের মাঝে তিনজনকে দেখে তীব্রভাবে চোখ ধাঁধিয়ে গেলো! সাধারন মানুষ দেখে অভ্যস্ত বলেই কি না, অপ্সরী দেখলে অস্বস্তি লাগে! কাছে এগিয়ে যেতেই অবশ্য দীর্ঘ দিনের জমিয়ে রাখা দীর্ঘশ্বাস আরো একবার নিজের অজান্তে বেরিয়ে এলো! পৃথিবীতে কিছু প্রশ্নের উত্তর কোন কালেই খুঁজে পাওয়া যায় না। তেমন একটি প্রশ্ন হলো, “বড় আপারা এতো সুন্দর কেন!?”
বলছিলাম ফারহানা নিম্মী আপা,নাজমুন নুসরাত আপা এবং তৃপ্ত সুপ্ত আপার কথা। দীর্ঘশ্বাস লুকিয়ে কাছে গিয়ে বললাম,“আপাত্রয়! কেমন আছ?” নিম্মী আপা করুণ সুরে বলল,“ভালো নাই রে!” নুসরাত আপার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,“আপা! ঘটনা কি?” নুসরাত আপা যা বলল তা হল,নুসরাত আপা আর তৃপ্ত আপা একই রঙের শাড়ি পরে এসেছে,কিন্তু তড়িঘড়ি করে আসতে গিয়ে নিম্মী আপা তাদের শাড়ির রঙ খেয়াল করেনি। ফলে তার শাড়ির রঙ হয়েছে অন্যরকম। এই কারনে তার মন খারাপ! নিম্মী আপা কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, তৃপ্ত আপা হাত তুলে তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল,“মেয়ে! অফ যা! পরীক্ষার কারনে আসার অনুমতিই পাচ্ছিলি না,রীতিমত কিডন্যাপ করে নিয়ে আসতে হয়েছে! আর এখন শাড়ির রঙ নিয়ে কান্নাকাটি শুরু করেছিস! তোকে যে কিডন্যাপ করে নিয়ে এসেছি,সেই উপলক্ষে বরং আমাকে ধন্যবাদ দে! কান্নাকাটি অফ!” আমি তাদেরকে ঐ অবস্থায় রেখে সামনের দিকে এগোলাম। এই মুহূর্তে এইখানে থাকা ঠিক না!
কিছু দুর এগোতেই দেখতে পেলাম গেট দিয়ে ইমরান নিলয়,নূহা চৌধুরী,নিশম সরকার,একুয়া রেজিয়া আপা,তনুশ্রী তালুকদার তনু আপা,ইয়াসির আরাফাত ভাই ঢুকছেন। মনটা হঠাৎ করে খুব বেশী ভালো হয়ে গেলো। আমার সব আশংকা দুর করে দিয়ে প্যনেলের মানুষগুলো ধীরে ধীরে আসতে শুরু করেছে! সকালে ঘুম থেকে উঠে যে কার মুখ দেখেছি তা চিন্তা করতে করতে যখন সামনের দিকে এগোচ্ছি,তখন দেখলাম একটু দুরেই মেহেদী হাসান মুন,সাকিব (হারু মিয়া) এবং আয়েশা কাশফি কোন একটা বিষয় নিয়ে গভীর আলোচনায় ব্যস্ত! কি বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে তা শোনার জন্য কান পাতলাম!

মুনঃ “এইটা একটা বিয়ে বাড়ি আপা? বিয়ে বাড়িতে যদি ঠাস্ ঠাস্ করে পটকা না ফোটে তাইলে কিসের বিয়ে বাড়ি!”
হারুঃ হুম!
কাশফিঃ তোদের কোন প্ল্যান আছে না কি?
মুন এবং হারু মিয়া পরস্পরের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে সমস্বরে বলল,
“আপা! কিছু টাকা দাও! পটকা কিনে নিয়ে আসি! তুমি ছাড়া বড় কোন ভাই বোন আশেপাশে দেখছিনা। আমাদের ছোটদের ও তো কিছু সাধ আহ্লাদ আছে!”
তাদের কথোপকথন শুনে খুব দ্রুত উল্টো দিকে হাঁটা শুরু করলাম! বর্তমান যুগের ছোট ভাই বোন বড়ই বিপজ্জনক!
মোটামুটি একটা নিরাপদ জায়গায় দাঁড়িয়ে কোন দিকে যাওয়া যায় সে বিষয়ে চিন্তা করছি। হঠাৎ “মোস্তা,মোস্তা” চিৎকারে চমকে গেলাম! ডাকটা পরিচিত,কিন্তু কণ্ঠস্বরটা না! হঠাৎ হন্তদন্ত হয়ে সামনে এসে দাঁড়ালো জয় দা!

জয় দা কে দেখে আমি এতটাই অবাক হলাম যে হাঁ করে দাঁড়িয়ে রইলাম! এই পাবলিক কোন সময় দেশে ল্যন্ড করেছে? রেজা শাওন ভাই দু'দিন আগে দেশে এসেছেন তা জানি। প্যানেলে প্রবাসী বলতে এ দু'জন। তারা দেশে আসার আগেই আমাদের জানার কথা। অথচ জয় দা দেশে এসেছে,আসার পর আবার বিয়ে বাড়িতে ও এসেছে,অথচ কিছুই জানতে পারলাম না! আমি যখন জয় দা’র দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি,তখন জয় দা বলে উঠলো,“এই তোর কাছে ক্যমেরা হবে,ক্যমেরা? ভালো একটা ক্যমেরা দরকার! তাড়াহুড়ো করে চলে আসছি,ক্যমেরা আনতে ভুলে গেছি! তোর কাছে একটা ক্যমেরা হবে ভাই?”
জয় দা’র কাকুতি মিনতি শুনে,না জানিয়ে দেশে ফেরা বিষয়ে দীর্ঘ বক্তৃতা দেওয়া থেকে বিরত হলাম। বিস্ময় লুকিয়ে জানতে চাইলাম, “ক্যামেরা দিয়ে কি হবে?”
“এইখানে এতো এতো সুন্দর সুন্দর খাবার,আর আমি কি না সেই ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড করতে পারছি না! বিষয়টা চিন্তা করে দেখ একটু! হাউ ইজ ইট পসিবল! একটা ক্যমেরা দরকার,একটা ক্যমেরা!”
বিড়বিড় করতে করতে জয় দা অন্য দিকে চলে গেলো। আমি তখনো হাঁ করে দাঁড়িয়ে আছি! হঠাৎ ঠুস ঠাস শব্দে বাস্তবে ফিরলাম! ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলাম মুন এবং হারু মিয়া মনের আনন্দে লাদেন বোমা ফুটিয়ে চলেছে! একটু দূরে বসে নিথর শ্রাবণ শিহাব ভাই গভীর মনযোগ দিয়ে তাদের লাদেন বোমা ফুটানো দেখছেন। কাছে যেতেই বললেন,“শুভ,তোমার কাছে লাদেন বোমা আছে? ওদের দুজনকে দেখে তো আমার ও লাদেন বোমা ফুটাতে ইচ্ছে করছে! আছে না কি?”
আমার মুখে “না” শব্দটি শুনে তিনি একটু বিমর্ষ হলেন। মাথাটা পেছনের দিকে হেলিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন,“ভাবছি,বাবাকোয়ার পরের পর্বে বাবাকোয়ার হাতে লাদেন বোমা তুলে দেবো। বাবাকোয়া লাদেন বোমা হাতে কি সব কাণ্ড করে বেড়ায় তা দেখার খুব শখ জেগেছে আমার! তবে একটা বিষয়ে আমি নিশ্চিত, বাবাকোয়ার হাতে লাদেন বোমা তুলে দিলে আর কিছু না হোক, মেজর মুরগির ঝিমুনি রোগটা কমবে। মেজর পদে থেকে সে রাত দিন ঝিমাবে, এটা তো ঠিক না!”
আমি শিহাব ভাইকে ঐ অবস্থায় রেখে উঠে পড়লাম। শিহাব ভাই যে চোখ বন্ধ করে ও চোখের সামনে লাদেন বোমা হাতে বাবাকোয়ার অদ্ভুত কর্ম কাণ্ড দেখছেন,তা তার মুখের মুচকি হাসি দেখে অনুমান করা যায়! শিহাব ভাইকে পেছনে রেখে,সামনে এগোতেই দেখলাম সাদ রুবায়েদ হাতে একটা বড়সড় লাঠি নিয়ে কোথায় যেন যাচ্ছে। এত দ্রুতই চোখের সামনে দিয়ে চলে গেলো,আমি কিছু জিজ্ঞেস করার সুযোগই পেলাম না!

মেঘলা আপার সাথে একটু দেখা করা দরকার ভেবে মেঘলা আপার খোঁজে বের হলাম। এর ওর কাছে জিজ্ঞেস করে মেঘলা আপার অবস্থান বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে যখন সামনে এগোচ্ছি,তখন দেখলাম সাদ আহমেদ ভাই,রেজা শাওন ভাই,রিয়াজুল আলম শাওন ভাই,ইয়াসির আরাফাত ভাই,নাজমুস সাকিব অনিক,আসিফ ইয়ামিন শুভ এক জায়গায় গোল হয়ে বসে আড্ডা দিচ্ছে। আমি দাঁড়িয়ে পড়লাম। এই স্বল্পভাষী মানুষগুলো কিভাবে আড্ডা দেয়,তা দেখার খুব শখ আমার। হঠাৎ জয় দা’র কণ্ঠস্বর! কাছে গিয়ে দেখলাম জয় দা বিভিন্ন খাবারের আইটেম হাতে নিয়ে বিভিন্ন স্টাইলে পোজ দিচ্ছে আর মারোয়ান বিন নাসির সৌরভ ভাই বিমর্ষ মুখে তার সেই ছবি তুলে চলেছেন! আরেকটু কাছে যেতেই সৌরভ ভাই ফিসফিসিয়ে বললেন,“মাত্রই ক্যামেরা গলায় ঝুলিয়ে বাস থেকে নেমে বাড়ির ভেতর ঢুকলাম। আর সাথে সাথেই………”
“সৌরভ! ভি চিহ্ন দেখিয়ে একটা পোজ দেবো?”
“দেন…….”।

মেঘলা আপাকে দেখতে যাওয়ার আগে দেখতে পেলাম,মুন এবং হারু মিয়া তারস্বরে চিৎকার করতে করতে দৌড়াচ্ছে! পেছনে লাঠি হাতে আয়েশা কাশফি,তার পেছনে সাদ রুবায়েদ! আমাকে দেখে সাদ রুবায়েদ দাঁড়িয়ে গিয়ে বলল,“ভাই! কাজটা ঠিক করেছি না? পটকা কেনার টাকা মেরে দিয়ে তোরা আইস্ক্রিম খেয়েছিস। আমাকে একটু সাথে নিয়ে তো যেতে পারতি! খা,এখন লাঠির বাড়ি খা!”

মেঘলা আপাকে ঘিরে অনেকগুলো মানুষ বসে আছে। এই ভিড় ঠেলে তার কাছে যাওয়া অসম্ভব! আমি দূর থেকে মেঘলা আপাকে দেখলাম। জানালার পাশে মাথায় ঘোমটা টেনে বসে আছে। শেষ বিকেলের আলো এসে আপার মুখে পড়েছে। কণে দেখা এই আলোয় তাকে অদ্ভুত রকম সুন্দর লাগছে। শান্ত হয়ে বসে আছে আপাটা। এই মানুষটাকে দেখে কে বলবে,হাত পা ভেঙ্গে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে কার্ড পাঠিয়েছে সে!

(৩)
সন্ধ্যার কিছুক্ষন পর খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ হয়ে যাওয়ায়,ধরেই নিয়েছিলাম আনন্দের দিনটার সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে। জয় দা তো এর মাঝেই “বুচি,বুচি রে!” বলে কয়েকবার ফুঁপিয়ে উঠেছে! রেহনুমা কুমকুম ধৈর্য ধরে একের পর এক টিস্যু সাপ্লাই দিয়ে যাচ্ছে জয় দা কে। সবার মাঝেই যখন বিদায়ের একটা করুণ সুর বাজছে,তখন মেঘলা আপা নিজেই ঘোষণা দিলো,“তুমুল আড্ডা হবে কিছুক্ষন,তারপর বিদায়ের কথা ভেবে দেখা যাবে!”
আমি দ্বিতীয় বারের মত চিন্তা করতে লাগলাম, আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে কার মুখ দেখেছি!

আড্ডা চলছে। সবাই মিলে আফরিনা হোসেন রিমু আপাকে পচানি দিচ্ছে দেরি করে আসার জন্য। রিমু আপা পরীক্ষার ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে বরাবরের মত এবারো বেঁচে গেলো! নিম্মি আপা আর নুহা চৌধুরীর টুকটাক ঝগড়া চলছে। ঝগড়ার বিষয়,কার চুলের ক্লিপ সুন্দর! পটকা কেনার টাকা আত্মসাৎ করে এই ঠাণ্ডায় আইস্ক্রিম খাওয়ার অপরাধে মুন এবং হারু মিয়াকে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টায় আছে আয়েশা কাশফি। শাস্তি ঠেকানোর জন্য তৃপ্ত সুপ্ত আপা দু হাতে দুজনকে কাছে টেনে বসিয়ে রেখেছে। জয় দা কার পেছনে লাগবে সেই চিন্তায় ব্যস্ত। আপাতত সে তনুশ্রী তালুকদার আপাকে ক্ষ্যপানর চেষ্টায় ব্যস্ত। শিহাব ভাই তখনো বোধহয় তার কল্পনার জগৎ থেকে বাস্তবে আসতে পারেনি! মাঝে মাঝেই হাতে ধরে রাখা লাদেন বোমার দিকে চোখ চলে যাচ্ছে তার! রেজা শাওন ভাই,প্রিয় নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের কালজয়ী কিছু সিনেমার পর্যালোচনা করছেন। সাদ আহমেদ ভাই,রিয়াজুল আলম শাওন ভাই,ইয়াসির আরাফাত ভাই,আসিফ ইয়ামিন শুভ,ইমরান নিলয় গভীর মনোযোগ দিয়ে পর্যালোচনা শুনছেন। একুয়া রেজিয়া আপা আর নাজমুস সাকিব অনিক কোন একটা বিষয় নিয়ে গভীর আলোচনায় ব্যস্ত।

টুকরো টুকরো আড্ডায় ব্যস্ত মানুষগুলো কে এক করার জন্যই বোধহয় আকাশ ভেঙ্গে জোছনা নেমেছে আজ। উঠান ভেসে যাওয়া চাঁদের আলোর দিকে তাকিয়ে মেঘলা আপা হঠাৎ করে বলে উঠলো,“আমার একটা ছোট্ট আবদার ছিল তৃপ্ত সুপ্ত আপা এবং রেহনুমা কুমকুমের কাছে। তোমাদের সবাইকে একসাথে পেয়েছি। আজ আমার বড় প্রাপ্তি এটাই। তাই এখন নতুন কোন আবদার করাটা অন্যায় হয়ে যেতে পারে। তারপর ও গান শোনানোর আবদারটা না করে পারছি না”।
মেঘলা আপার কথার সুত্র ধরেই ভাবতে লাগলাম,আমার বড় পাওয়া টা কি ছিল আজ? হ্যা,অনেকখানি মায়া! এটাই আমার বড় পাওয়া। আবার পরবর্তী কোন একদিনে সবাই এক জায়গায় উপস্থিত হওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত এই মায়া জিনিসটাকে যত্ন করে বুক পকেটে রেখে দিতে হবে। যখন মানুষগুলোর কথা খুব মনে পড়বে, তখন বুক পকেটে হাত রাখলেই হবে………
তৃপ্ত আপা আর রেহনুমা কুমকুম তখন একসাথে গেয়ে চলেছে,

“ক্ষনিক আলোকে আঁখির ও পলকে
তোমায় যবে পায় দেখিতে,
হারাই হারাই সদা হয় ভয়
হারাইয়া ফেলি চকিতে।
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই
চিরদিন কেন পাই না………”

চাঁদের আলোর সাথে সুর মিলিয়ে রাত বাড়ছে। ভাল লাগার মুহূর্ত গুলো এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায় কেন?

[ গল্পে বর্ণিত চরিত্রদের বাস্তব অস্তিত্ব থাকলে ও,উপরে বর্ণিত সমস্ত ঘটনাই কাল্পনিক। ]


https://www.facebook.com/karimmufte?ref=tn_tnmn

Comments

Popular posts from this blog

Learning to Pray

Arduino and MQ 2 gas sensor