রুবির প্রথম দেখা
হাফিজের
সাথে রুবির প্রথম দেখা হয় একটি পার্টিতে । রুবিকে অসাধারন লাগছিল , অনেক
ছেলেরাই রুবির সাথে কথা বলতে চাচ্ছিল, এদিকে হাফিজ ছিল অতি সাধারন একটি
ছেলে , কেউই তার দিকে খেয়াল করছিল না ।
পার্টি শেষে হাফিজ রুবিকে তার সাথে কফি খাওয়ার দাওয়াত দিল । রুবি আশ্চর্যিত হল কিন্তু ভদ্রতা বজায় রাখতে সে হাফিজের সাথে কফি খেতে রাজি হল । তারা একটি সুন্দর কফিশপে বসল, হাফিজ কোন কিছু বলতে পারছিল না কারন সে অনেক নারভাস ছিল । রুবি অস্বস্তি বোধ করতে লাগল , এবং ও নিজে নিজে ভাবতে লাগল,"দয়া করে আমাকে বাড়ি যেতে দিন..."
হঠাত্ করেই হাফিজ ওয়েটারকে ডাক দিয়ে বলল, "আপনি আমাকে একটু লবন দিতে পারবেন? আমি কফিতে লবন দিয়ে খেতে পছন্দ করি"
সবাই ওর দিকে চোখ বড় বড় তাকাল, কি অদ্ভুত! হাফিজ কিছুটা লজ্জা পেল কিন্তু তারপরেও সে কফির মধ্যে লবন দিল এবং তা পান করল।
রুবি হাফিজকে আগ্রহী হয়ে জিজ্ঞেস করল ,"তোমার এই শখ কেন?"
হাফিজ উত্তর দিল,"যখন আমি ছোট ছিলাম, আমি সমুদ্রের কাছাকাছি বাস করতাম, আমি সমুদ্রতীরে খেলা করতে পছন্দ করতাম, আমি সমুদ্রের পানির স্বাদ বুজতে পারতাম, ঠিক এই লবনাক্ত কফির মত স্বাদ। এখন সবসময় আমি লবনাক্ত কফি খাই, আমি সবসময় আমার শৈশবের কথা ভাবি,আমার গ্রামের বাড়ির কথা ভাবি , আমি আমার গ্রামকে খুব মিস করি, আমি আমার বাবা মাকে মিস করি যারা এখনো সেখানে বসবাস করে"
যখন হাফিজ এই কথাগুলো বলছিল তার চোখ পানিতে ভরে উঠেছিল। এই কথাগুলো রুবিকে গভীরভাবে স্পর্শ করল। এটা ছিল হাফিজের সত্যিকারের অনুভুতি, হৃদয়ের গভীর থেকে বলেছিল। একজন মানুষ যে তার বাড়ির প্রতি দুর্বলতার কথা বলতে পারে, সে অবশ্যই একজন মানুষ যে তার বাড়িকে ভালবাসে, বাড়ির প্রতি খেয়াল রাখে, বাড়ির প্রতি দ্বায়িত্ববোধ আছে...
তারপর রুবি বলতে শুরু করল, বলল তার গ্রামের বাড়ি সম্পর্কে, তার শৈশব এবং তার পরিবার সম্পর্কে ।
এটা ছিল সত্যি অনেক সুন্দর একটি দিন এবং একটি সুন্দর গল্পের শুরু হয়েছিল এদিনটিতেই ।
তারা নিয়মিত দেখা করা শুরু করল , রুবি হাফিজের মধ্যে এমন একজন মানুষকে খুঁজে পেল যে তার সব আবদার পূরন করে; হাফিজের সহনশীলতা ছিল, ছিল একটি মোমের মত হৃদয়, সাদর, সতর্ক। হাফিজ সত্যি একজন ভাল ব্যক্তি ছিল কিন্তু রুবি প্রায়ই তাকে মিস করা শুরু করল তথা ভালবাসতে শুরু করল । রুবি মনে মনে ধন্যবাদ দেয় হাফিজের লবনাক্ত কফিকে !
তারপরের ঘটনা ছিল প্রত্যেকটি সুন্দর ভালবাসার গল্পের মতই, রাজকন্যার সাথে রাজপুত্রের বিয়ে হল এবং তারা সুখী জীবন যাপন করতে লাগল ।... এবং যতবার রূবি হাফিজের জন্য কফি বানাত, সে কফিতে লবন দিয়ে দিত, কারন রুবি জানত হাফিজ এভাবেই কফি খেতে পছন্দ করে।
৪০ বছর পর.........
হাফিজ মারা গেল। মারা যাওয়ার আগে একটি চিঠি লিখে রেখে গিয়েছিল হাফিজ। রুবি চিঠিটি পেল একটি ডায়েরীর উপর....যাতে লেখা ছিল, "আমার প্রিয়তমা আমাকে ক্ষমা করে দিও, ক্ষমা করে দাও আমার সারাজীবনের মিথ্যাকে। এটাই ছিল একমাত্র মিথ্যা যা আমি তোমাকে বলেছিলাম---লবনাক্ত কফি । মনে পরে আমাদের প্রথমবার দেখা হওয়ার কথা? আমি ঐ সময় অনেক নারভাস ছিলাম, আসলে আমি চিনি চাইতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমি বলেছিলাম লবনের কথা। পরে আবার চিনির কথা বলা আরো বেশি লজ্জাজনক ছিল তাই আমি লবন দিয়েই কফি খেলাম । আমি কখনোই ভাবিনি এটাই হতে পারে আমাদের যোগাযোগের সূত্রপাত !
আমি তোমাকে সত্যিটা বলার জন্য অনেকবার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু আমি অনেক ভীত ছিলাম কারন আমি তোমাকে প্রমিজ করেছিলাম কোনকিছু নিয়ে তোমাকে মিথ্যা বলব না ।...
এখন আমি মারা যাচ্ছি, কোনকিছুতেই ভয় পাচ্ছিনা তাই আমি তোমাকে সত্যিটা বললাম, আমি লবনাক্ত কফি পছন্দ করি না, এটা খেতে খুব বিশ্রী... কিন্তু আমাকে সারাজীবন লবনাক্ত কফি খেতে হয়েছে! যখন থেকে আমি তোমাকে চিনতাম, আমি তোমার জন্য যা কিছু করেছি , কখনোই কোনকিছুর জন্য অনুতপ্ত হইনি। তোমাকে পাওয়ার ঘটনা ছিল আমার জীবনের সবথেকে বড় সুখের স্মৃতি। আমি যদি দ্বিতীয়বার জন্মানোর সুযোগ পাই , তারপরেও তোমাকে চাইব এবং তোমাকে সারা জীবনের জন্য পেতে চাইব, যদি আমাকে আমাকে আবারো লবনাক্ত কফি খেতে হয় তবুও শুধু তোমাকেই চাইব।"
রুবির চোখের জলে চিঠিটি পুরোপুরি ভিজে গেল।
এরপর বহুদিন কেটে গেল........
কোন একদিন, কেউ একজন রুবিকে জিজ্ঞেস করল," লবনাক্ত কফির মজাটা কি?"
রুবি উত্তর দিল,"অসাধারন"
কিছু কথাঃ
ভালবাসা মানে ভুলে যাওয়া নয় , ভালবাসা মানে শত ভুল ক্ষমা করা ।
ভালবাসা মানে দেখা নয় , ভালবাসা মানে একে অপরকে বুজতে পারা ।
ভালবাসা মানে শুধু একে অপরের কথা শোন নয় , ভালবাসা মানে একে অপরের কথা মন দিয়ে শোনা ।
ভালবাসা মানে চলে যেতে দেওয়া নয় , ভালবাসা মানে "ধরে রাখা"!!!!
(লাইক ♥ কমেন্ট ♥ শেয়ার)
পার্টি শেষে হাফিজ রুবিকে তার সাথে কফি খাওয়ার দাওয়াত দিল । রুবি আশ্চর্যিত হল কিন্তু ভদ্রতা বজায় রাখতে সে হাফিজের সাথে কফি খেতে রাজি হল । তারা একটি সুন্দর কফিশপে বসল, হাফিজ কোন কিছু বলতে পারছিল না কারন সে অনেক নারভাস ছিল । রুবি অস্বস্তি বোধ করতে লাগল , এবং ও নিজে নিজে ভাবতে লাগল,"দয়া করে আমাকে বাড়ি যেতে দিন..."
হঠাত্ করেই হাফিজ ওয়েটারকে ডাক দিয়ে বলল, "আপনি আমাকে একটু লবন দিতে পারবেন? আমি কফিতে লবন দিয়ে খেতে পছন্দ করি"
সবাই ওর দিকে চোখ বড় বড় তাকাল, কি অদ্ভুত! হাফিজ কিছুটা লজ্জা পেল কিন্তু তারপরেও সে কফির মধ্যে লবন দিল এবং তা পান করল।
রুবি হাফিজকে আগ্রহী হয়ে জিজ্ঞেস করল ,"তোমার এই শখ কেন?"
হাফিজ উত্তর দিল,"যখন আমি ছোট ছিলাম, আমি সমুদ্রের কাছাকাছি বাস করতাম, আমি সমুদ্রতীরে খেলা করতে পছন্দ করতাম, আমি সমুদ্রের পানির স্বাদ বুজতে পারতাম, ঠিক এই লবনাক্ত কফির মত স্বাদ। এখন সবসময় আমি লবনাক্ত কফি খাই, আমি সবসময় আমার শৈশবের কথা ভাবি,আমার গ্রামের বাড়ির কথা ভাবি , আমি আমার গ্রামকে খুব মিস করি, আমি আমার বাবা মাকে মিস করি যারা এখনো সেখানে বসবাস করে"
যখন হাফিজ এই কথাগুলো বলছিল তার চোখ পানিতে ভরে উঠেছিল। এই কথাগুলো রুবিকে গভীরভাবে স্পর্শ করল। এটা ছিল হাফিজের সত্যিকারের অনুভুতি, হৃদয়ের গভীর থেকে বলেছিল। একজন মানুষ যে তার বাড়ির প্রতি দুর্বলতার কথা বলতে পারে, সে অবশ্যই একজন মানুষ যে তার বাড়িকে ভালবাসে, বাড়ির প্রতি খেয়াল রাখে, বাড়ির প্রতি দ্বায়িত্ববোধ আছে...
তারপর রুবি বলতে শুরু করল, বলল তার গ্রামের বাড়ি সম্পর্কে, তার শৈশব এবং তার পরিবার সম্পর্কে ।
এটা ছিল সত্যি অনেক সুন্দর একটি দিন এবং একটি সুন্দর গল্পের শুরু হয়েছিল এদিনটিতেই ।
তারা নিয়মিত দেখা করা শুরু করল , রুবি হাফিজের মধ্যে এমন একজন মানুষকে খুঁজে পেল যে তার সব আবদার পূরন করে; হাফিজের সহনশীলতা ছিল, ছিল একটি মোমের মত হৃদয়, সাদর, সতর্ক। হাফিজ সত্যি একজন ভাল ব্যক্তি ছিল কিন্তু রুবি প্রায়ই তাকে মিস করা শুরু করল তথা ভালবাসতে শুরু করল । রুবি মনে মনে ধন্যবাদ দেয় হাফিজের লবনাক্ত কফিকে !
তারপরের ঘটনা ছিল প্রত্যেকটি সুন্দর ভালবাসার গল্পের মতই, রাজকন্যার সাথে রাজপুত্রের বিয়ে হল এবং তারা সুখী জীবন যাপন করতে লাগল ।... এবং যতবার রূবি হাফিজের জন্য কফি বানাত, সে কফিতে লবন দিয়ে দিত, কারন রুবি জানত হাফিজ এভাবেই কফি খেতে পছন্দ করে।
৪০ বছর পর.........
হাফিজ মারা গেল। মারা যাওয়ার আগে একটি চিঠি লিখে রেখে গিয়েছিল হাফিজ। রুবি চিঠিটি পেল একটি ডায়েরীর উপর....যাতে লেখা ছিল, "আমার প্রিয়তমা আমাকে ক্ষমা করে দিও, ক্ষমা করে দাও আমার সারাজীবনের মিথ্যাকে। এটাই ছিল একমাত্র মিথ্যা যা আমি তোমাকে বলেছিলাম---লবনাক্ত কফি । মনে পরে আমাদের প্রথমবার দেখা হওয়ার কথা? আমি ঐ সময় অনেক নারভাস ছিলাম, আসলে আমি চিনি চাইতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমি বলেছিলাম লবনের কথা। পরে আবার চিনির কথা বলা আরো বেশি লজ্জাজনক ছিল তাই আমি লবন দিয়েই কফি খেলাম । আমি কখনোই ভাবিনি এটাই হতে পারে আমাদের যোগাযোগের সূত্রপাত !
আমি তোমাকে সত্যিটা বলার জন্য অনেকবার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু আমি অনেক ভীত ছিলাম কারন আমি তোমাকে প্রমিজ করেছিলাম কোনকিছু নিয়ে তোমাকে মিথ্যা বলব না ।...
এখন আমি মারা যাচ্ছি, কোনকিছুতেই ভয় পাচ্ছিনা তাই আমি তোমাকে সত্যিটা বললাম, আমি লবনাক্ত কফি পছন্দ করি না, এটা খেতে খুব বিশ্রী... কিন্তু আমাকে সারাজীবন লবনাক্ত কফি খেতে হয়েছে! যখন থেকে আমি তোমাকে চিনতাম, আমি তোমার জন্য যা কিছু করেছি , কখনোই কোনকিছুর জন্য অনুতপ্ত হইনি। তোমাকে পাওয়ার ঘটনা ছিল আমার জীবনের সবথেকে বড় সুখের স্মৃতি। আমি যদি দ্বিতীয়বার জন্মানোর সুযোগ পাই , তারপরেও তোমাকে চাইব এবং তোমাকে সারা জীবনের জন্য পেতে চাইব, যদি আমাকে আমাকে আবারো লবনাক্ত কফি খেতে হয় তবুও শুধু তোমাকেই চাইব।"
রুবির চোখের জলে চিঠিটি পুরোপুরি ভিজে গেল।
এরপর বহুদিন কেটে গেল........
কোন একদিন, কেউ একজন রুবিকে জিজ্ঞেস করল," লবনাক্ত কফির মজাটা কি?"
রুবি উত্তর দিল,"অসাধারন"
কিছু কথাঃ
ভালবাসা মানে ভুলে যাওয়া নয় , ভালবাসা মানে শত ভুল ক্ষমা করা ।
ভালবাসা মানে দেখা নয় , ভালবাসা মানে একে অপরকে বুজতে পারা ।
ভালবাসা মানে শুধু একে অপরের কথা শোন নয় , ভালবাসা মানে একে অপরের কথা মন দিয়ে শোনা ।
ভালবাসা মানে চলে যেতে দেওয়া নয় , ভালবাসা মানে "ধরে রাখা"!!!!
(লাইক ♥ কমেন্ট ♥ শেয়ার)

Comments
Post a Comment