দু’জন মা বাচ্চা প্রসব করেছে


‘ভবনের ৪ তলায় দু’জন মা বাচ্চা প্রসব করেছে। মা ও বাচ্চা দু’জনে ভালো আছে।’ হাউ মাউ করে কাঁদতে কাঁদতে এ কথা বলেন ধসে যাওয়া রানা প্লাজার চতুর্থ তলায় ঢুকে ফিরে আসা উদ্ধারকর্মী সুজন।

তিনি বলেন, “আমি রাত ১১টা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত দু’টো কক্ষে ওই দুই মা এবং বাচ্চা ছাড়াও ৫ শতাধিক জীবিত ও মৃত মানুষ দেখেছি। যারা জীবিত আছে তাদের কারো হাত, কারো পা ভেঙে অর্ধমৃত অবস্থায় পড়ে আছে।”

অক্সিজেনের অভাবে অনেককেই চোখের সামনে মারা যেতে দেখেছেন সুজন।

তিনি বলেন, ‘‘একটি রুমের এক কোনায় বড় দু’টো খণ্ডের মাঝখানে দু’মা বাচ্চা প্রসব করেছেন। সেখানকার দৃশ্য বলে বোঝানোর ভাষা আমার জানা নেই। আমি দশ মিনিট বসে বসে কেঁদেছি। কিন্তু আমি যে ছিদ্র দিয়ে ঢুকেছি সেখান দিয়ে মা ও বাচ্চাকে বের করা সম্ভব নয়।”

সুজন আরও বলেন, “অনেক কষ্টে রাত সাড়ে চারটার সময় বাইরে খবর দিতে পেরেছি যে, এখানে অনেকেই আটকা আছেন। আমিও মরে যাচ্ছিলাম অক্সিজেনের অভাবে। পরে অনেক কষ্টে বের হওয়ার সময় আরও কয়েকজনসহ মোট ৪০-৫০ জনকে উদ্ধার করেছি আমি।”

উদ্ধারকর্মী কামাল ইসলাম বলেন, ‘‘আমিও পাঁচ তলায় এক মৃত নারীর পাশে বাচ্চা দেখেছি। বাচ্চাটি অনেক ছোট ছিল। আমার অক্সিজেনও শেষ হয়ে যায়। পরে দেওয়ালের একটি খণ্ড পড়ে আমার চোখের সামনে বাচ্চাটি মারা যায়। এত নিষ্ঠুর পৃথিবী হতে পারে বলে আমি জানতাম না।”

এই বাচ্চা দুটোকে বের করে নিয়ে আসতে হলে এখন আমাদের সাহায্য দরকার। প্লীজ যে যেভাবে পারেন সাহায্য করেন।

এখন সাভারে দরকার ড্রিল মেশিন, কাটার, টর্চ আর ওষুধ। আমি আছি। শুধু মাত্র আমার হাতে পৌছে দেয়ার দায়িত্বটুকু আপনাদের নিতে হবে।

গতকালকে অল্প একটু সময়ের মধ্যে অনেক সাহায্য পেয়েছি অনেকের থেকেই। সেগুলো পাঠানো হয়ে গ্যাছে। আজ আরেকবার হাত পাতলাম। আমাকে কেউ দুই/তিনটা এম্বুলেন্স এর ব্যবস্থা করে দেবেন? আমি আজ থেকে পরশু শনিবার রাত পর্যন্ত ঢাকা থেকে সাভার-সাভার থেকে ঢাকা যেতে আসতে প্রস্তুত আহতদের নিয়ে। কেউ/কোন গ্রুপ যদি এই হেল্পটা করতে চান তাহলে আমাকে জানাইয়েন। আমি অপেক্ষায় থাকলাম।

Comments

Popular posts from this blog

Learning to Pray

Arduino and MQ 2 gas sensor